
আলহামদুলিল্লাহ, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র দূর্যোগ মাথায় নিয়েও নেস্ট পরিবার আজ (৫ই মে) দুটি রোগীকে রক্ত দিতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের নিবন্ধিত রক্তদাতা মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম (বি পজেটিভ) এবং মোহাম্মদ শাহীন আলম (এবি পজেটিভ) আজ রক্তদানের মাধ্যমে দুটি জীবন রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।

রক্তদাতা মোঃ ফকরুল ইসলাম (বি পজেটিভ) এর রোগী মোঃ আলীমুজ্জামান বর্তমানে ওয়ারী বার্ডেম হাসপাতালে ভর্তি আছে। রোগীর আত্মীয় আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা আমাদের ডোনার লিস্ট দেখে ফকরুল ইসলামকে নিয়ে হসপিটালে যাই। পরে জানতে পারি যে রোগীর ২ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। স্বস্তির বিষয় হলো যে আজ ১ ব্যাগ, আর বাকী ১ ব্যাগ আগামীকাল দিলেও চলবে। স্যাম্পল দিয়ে ওয়ারী থেকে আমাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হসপিটালে পাঠানো হলো। সিএনজি করে আমি (নেস্ট মহাসচিব, রিদওয়ান আহমেদ), চেয়ারম্যান আকিদুল ইসলাম, রক্তদাতা মোঃ ফকরুল ইসলাম যাই। আমাদের আরেক রক্তদাতা মোঃ শাহীন আলমকেও সাথে করে নিয়ে যাই। মূলত আজ রক্ত দিবে মোঃ ফকরুল ইসলাম। পরে কেন্দ্রীয় পুলিশ হসপিটালের ব্লাড ব্যাংকে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমাদের নেস্ট এর কার্যক্রম তথা স্বেচ্ছায় রক্ত দানের কথা শুনে নেস্ট এর প্রতি উনার ভালো লাগার কথা ব্যক্ত করেন।
আলোচনার এক পর্যায় আমাদের নিবন্ধিত এবি পজেটিভ কোন রক্তদাতা আছে কী না জানতে চান এবং বলেন বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে যশোর থেকে তরিকুল ইসলাম নামে একজন রোগীর ঢাকা মেডিকেল হসপিটালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি আছেন। রোগীর শরীরের বেশ কিছু জায়গা পুড়ে যেগে, আগামীকাল তার অপারেশন, জরুরী ভিত্তিতে এবি পজেটিভ রক্তের প্রয়োজন। রোগীর বড় ভাই একটু আগেও নাকী তাদের এখানে খোজ করে গেছেন। আল্লাহর কি রহমত, এই গ্রুপের রক্তদাতা (শাহীন আলম) আমাদের সাথেই তখন উপস্থিত ছিলেন। পরে দ্রুত ঐ রোগীর (তরিকুল ইসলাম) বড় ভাইকে কল দিয়ে আবার পুলিশ হসপিটালে নিয়ে আসি। আসার পর উনার কাগজপত্র দেখে মোঃ শাহীন আলম কে প্রস্তুত করি। অবশেষে এক ব্যাগ (এবি পজেটিভ) রক্ত তার হাতে তুলে দেই, যা তার ছোট ভাই তরিকুল ইসলাম এর জীবন বাচাতে সহায়ক হবে ইনশা আল্লাহ।

হয় তো ব্লাড ব্যাংকে আমাদের কার্যক্রম (এক রোগীকে বি পজেটিভ রক্ত দিতে এসে আরেক জনকে এবি পজেটিভ রক্ত দেয়া) দেখে উৎসাহিত হয়ে তোফাজ্জল (বি পজেটিভ) নামে এক পুলিশ ভাই রক্ত দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তখন আমরা আমাদের প্রথম রোগী মোঃ আলীমুজ্জামান এর জন্য রক্ত দিতে উনাকে অনুরোধ করলে তিনি রাজি হন এবং উক্ত রোগীর জীবন বাচাতে ভুমিকা রাখেন।

তোফাজ্জল ভাইকে নেস্ট পরিবার এর পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
নেস্ট মানবতার কল্যাণে নিয়জিত, মানব সেবায় তৃপ্তি পায় নেস্ট।
রক্ত দানের ক্ষেত্রে নেস্ট রোগীর প্রতিনিধিদের থেকে কোন প্রকার টাকা-পয়সা গ্রহন করে না। বরং রক্ত গ্রহিতা (রোগী) বা তাদের আত্মীয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে রক্তদাতাকে নিয়ে রক্ত দিতে যাওয়া-আসার ভাড়া এবং রক্ত দেয়ার পর রক্তদাতার ডাব/ডিম/জুস ইত্যাদির ব্যয়ও নেস্ট পরিবার নিজেই বহন করে থাকে।টাকার জন্য নয়, মানুষের দোয়া-ভালোবাসার মাধ্যমে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের সন্তুষ্টির জন্যই (সাধ্যমত) নেস্ট রক্তদাতারা ছুটে যায় দিবা-রাত্রি।