Home Blog Page 4

ব্যারিস্টার রফিক উল হকের মৃত্যুতে নেস্ট’র শোক প্রকাশ

0

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী, সাবেক আ্যটর্নি জেনারেল এবং আইনজীবী সমাজের প্রবীণ অভিভাবক ব্যারিস্টার রফিক উল হক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শনিবার সকাল ৮ঃ৩০ ঘটিকায় রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

আইনাঙ্গনের এই নক্ষত্রের চিরবিদায়ে আমরা নেস্ট পরিবার গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আদ দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কয়েকদিন আগে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।

সিনিয়র এই আইনজীবী পেশাগত জীবনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন ২০০৭ সালে, ওয়ান-ইলেভেন নামে পরিচিত রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কারাবন্দী আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
এছাড়া বাংলাদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেছিলেন তিনি, যে কারণে আদ দ্বীন হাসপাতাল সহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

একই সাথে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার আইনজীবী:-
২০০৭ সালের পর ফখরুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা সহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেই মামলা করে তৎকালীন সরকার।
সেসময় রফিকুল হক শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া উভয়ের স্বপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিচয় না থাকার কারণেই দুই দলের নেত্রীর পক্ষে আইনজীবী হতে পেরেছিলেন তিনি।
“বাংলাদেশের বাস্তবতায় যে কোনো সিনিয়র আইনজীবীর কোনো না কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকে। যেই অল্প কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না, রফিকুল হক ছিলেন তাদের একজন।”
“সেসময়ের তত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি দুই জনেরই (শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া) আইনজীবী হয়েছিলেন, কারণ তাঁর রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছিল না। আর সেসময় রাজনৈতিক পরিচয় থাকা অনেক আইনজীবীই বিভিন্ন কারণে ঐ দুইজনকে আইনি সহায়তা দেয়া থেকে বিরত ছিলেন।”
শাহদীন মালিক বলেন, একজন সিনিয়র আইনজীবীর একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতি সমর্থন থাকলে অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিরা আইনি সমস্যা নিয়ে ঐ আইনজীবীর কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকে।
রফিক-উল হক সব ধরণের রাজনীতি থেকে নিজেকে আলাদা রাখার কারণেই সব দল ও মতবাদের মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল বলে মন্তব্য করেন শাহদীন মালিক।
“সুপ্রিম কোর্ট বা বার অ্যাসোসিয়েশনের রাজনীতির সাথেও তিনি কখনো জড়িত হননি, ইচ্ছাকৃতভাবে দূরে থেকেছেন। ফলে যে কোনো রাজনৈতিক দলের লোকই আইনি সমস্যা নিয়ে তার দ্বারস্থ হতে পারতেন। তিনি কখনোই যেহেতু কোনো দল করেননি, তাই সব রাজনৈতিক দলের লোকই তার কাছে যেত এবং তার ওপর ভরসা তরে পারতো।”

আইনজীবী হিসেবে জীবন:-
রফিকুল ইসলাম তার পেশাগত জীবনে সব ধরণের রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মন্তব্য করেন সিনিয়র আইনজীবী আমীর-উল ইসলাম।
আমিরুল ইসলাম বলেন, “এরশাদের সামরিক সরকারের আমলে অনেক মানুষের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক মামলা দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করেও সেসময় ওরকম অনেক মামলা লড়েছেন রফিকুল হক।”
রফিকুল হক ১৯৮৯-৯০ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া যে কোনো মামলায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেওে সবসময় তিনি নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতেন বলে মন্তব্য করেন শাহদীন মালিক।
“তার বয়স ৮০ বছরের বেশি হওয়ার পরও আমরা দেখেছি যে, কোনো মামলায় তিনি ব্যাপক পড়ালেখা করে, প্রস্তুতি নিয়ে আসতেন। অভিজ্ঞ, সিনিয়র আইনজীবী হওয়ায় কোনো মামলার ক্ষেত্রে কম প্রস্তুতি নিয়ে আসতে দেখিনি তাকে।”

চিকিৎসাসেবায় অবদান:-
রফিক-উল হক তার ব্যক্তিগত আয় থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে চিকিৎসার উন্নয়নের জন্য দান করেছেন।
শাহদীন মালিক বলেন, “প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হিসেবে তার আয় ছিল অনেক। আর সেই হারেই তিনি দানও করতেন। আমাদের ধারণা, তিনি তার জীবনে কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থ দান করে গেছেন। আর এই বিষয়ে তিনি খুব একটা কথাও বলতেন না।”
আদ দ্বীন হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তৈরির পেছনে তার বড় ভূমিকা রয়েছে।
বারডেম হাসপাতালের একটি বিশেষ বিভাগ তৈরিতে বড় অঙ্কের অনুদান দেয়ার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ঢাকার বাইরে কয়েকটি সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।
এছাড়া ঢাকার আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের জন্যও তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেছেন। (সূত্র: বিবিসি বাংলা)

জন্মদিনে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নেস্ট’র শুভেচ্ছা

0

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন।
“জন্মদিনে নেস্ট পরিবার এর পক্ষ থেকে দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও ভালোবাসা। নিপুণ দক্ষতায় আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সকল ষড়যন্ত্রের মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের পথে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। মহান আল্লাহর কাছে আমরা আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।”

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক জীবনে চারবার প্রধানমন্ত্রী এবং তিনবার জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাপশি তিনি ৪০ বছর ধরে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন। তার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশন এবং উন্নয়নশীল ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের পথে।

মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শেখ হাসিনা ছিলেন জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার কনিষ্ঠ ভাই-বোন হলেন- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। শেখ হাসিনা গ্রামবাংলার ধূলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সাথেই বেড়ে উঠেছেন। গ্রামের সাথে তাই তাঁর নিবিড় সম্পর্ক।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গীপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তাঁর পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসনে। পুরানো ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন। পরে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত হলে আবাস স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ধানমণ্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বসবাস শরু করেন ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর। এ সময় শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। একই বছর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন এবং ৬-দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬-দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্তস্ত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় প্রচণ্ড দমন-নির্যাতন-নিপীড়ন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তাঁর জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা, অনিশ্চয়তা ও অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলিতেই, কারাবন্দি পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় বাঙালি জাতির ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে যখন পাকহানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যায় তখন বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন একটি বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই গৃহবন্দি থাকাবস্থায় শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তিনি মুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর তার কন্যা সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল জন্ম লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এসময় বিদেশে থাকায় পরম করুণাময় আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশ-মাতৃকার হাল ধরার। ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে নেস্ট’র শোক প্রকাশ

0

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৫মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে আমরা নেস্ট পরিবার গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা অ্যাটর্নি জেনারেল। দেশের ১৫তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ২০০৯ সালের ১৩ই জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এর আগে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশে এমন এক সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে ছিলেন যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বিচার বিভাগকে ঘিরে নানা বিতর্কের কারণে সারাক্ষণই তার দপ্তর ছিল গণমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রে।
তিনি দীর্ঘকাল একজন আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নেতৃত্বও দিয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে ১৯৪৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি মাহবুবে আলম জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৬৯ সালে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ প্রথম হওয়ায় নেস্টের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন

0

জাতিসংঘের শান্তি মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে ফের বাংলাদেশের প্রথম স্থান অর্জনে নেস্ট পরিবার অনেক আনন্দিত এবং গর্বিত। এ অর্জনে নেস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে শান্তিরক্ষী হিসেবে অংশ নিয়ে যারা বহির বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জল করেছেন আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে আবারও প্রথম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬৭৩১ জন শান্তিরক্ষী প্রেরণের মাধ্যমে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পুনরায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানে অংশ নিয়ে বিশ্বে শান্তি রক্ষায় অবদান রেখে চলেছে।

নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নেস্টের শোক প্রকাশ

0

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গত শুক্রবার এশার নামাজের সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নেস্ট পরিবার গভীর ভাবে শোকাহত।
আমরা বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ যেন নিহতদের জান্নাতের উচ্চ মকাম দান করেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা দান করেন, আমিন।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গত শুক্রবার এশার নামাজের সময় ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পর মোট ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২৮ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
দগ্ধদের মধ্যে কেবল একজন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরতে পেরেছেন। বাকি যে আটজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদের বদ্ধ পরিবেশে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।

হিজরী নবর্বষ উপলক্ষে দেশবাসীকে নেস্ট’র শুভেচ্ছা

0

বছর ঘুরে আবার পবিত্র হিজরী নবর্বষ আমাদের মাঝে এসেছে। আজ ১লা মুহাররম। হিজরী ১৪৪২ সালের পহেলা দিন। নেস্ট পরিবার এর পক্ষ থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকলকে জানাই আরবি তথা হিজরী নববর্ষ Hijri New Year 1442, হিজরি নতুন বর্ষ ১৪৪২ এর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ।

কবি কন্ঠে বলি-
“এলো শোকের সেই মহররম, কারবালার স্মৃতি লয়ে, আজ বেতাব বিশ্ব মুসলিম, সেই শোক রোয়ে রোয়ে। ওরে বাঙলার মুসলিম, তোরা কাঁদ, এনেছে এজিদি বিদ্বেষ পুন মোহর্রমের চাঁদ”~ কাজী নজরুল ইসলাম।

লেখক: মুহাম্মদ হাসান ক্বাদেরী, চাঁদপুর:-
কালের আবর্তে আমাদের মাঝে আবারো উপস্থিত হিজরি সন ১৪৪২। আরবি বর্ষপঞ্জি তথা হিজরী সনের প্রথম মাস মহররম। আর পহেলা মহররম হলো হিজরি নববর্ষ। হিজরি নববর্ষ মুসলিম উম্মাহর এক জাতীয় উৎসব। প্রতিবছর হিজরি নববর্ষ আবির্ভূত হয় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের সেই পবিত্র স্মৃতি নিয়ে। প্রিয় পাঠক! তাহলে আসুন রাসূল সা. এর সেই ঐতিহাসিক ঘটনা তথা হিজরত সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

হিজরত কী এবং কেন? :

হিজরত অর্থ হল ত্যাগ করা, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে রাসূল সা. ও সাহাবা রা.দের মক্কা নগরী ত্যাগ করে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য মদিনায় চলে যাওয়াকেই হিজরত বলে অবহিত করা হয়।
যুগে যুগে প্রায় সকল নবী-রাসূলগণকেই নিজ জন্মভূমি ত্যাগ করে অন্য স্থানে যেতে হয়েছে। কেন না নবী-রাসূলগণের বিরোধিতা করা, তাদের অপবাদ দেয়া, গালমন্দ করা, এমনকি হত্যা পর্যস্ত করা পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন কোনো ঘটনা নয়।

সর্বশেষ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. যখন আল্লাহ তায়ালার এই নির্দেশ প্রাপ্ত হোন যে, “অতএব, আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন।”
(সূরা : হিজর, ৯৪)
তখন থেকেই প্রিয় নবী সা. মক্কার অধিবাসীদের মূর্তি পূজা পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর ইবাদতের জন্য আহবান করতে লাগলেন। হাতে গণা কয়েকজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি ছাড়া মক্কার অধিকাংশ কাফির-মুশরিকরাই রাসূল সা. এর সেই আহ্বানে সাড়া দিল না। সাড়াতো দিলোই না, বরং তাঁর প্রচার কাজে নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করতে লাগলো। চালাতে থাকল অমানুষিক জুলুম-নির্যাতন। এমনকি সামাজিকভাবেও রাসূল সা. এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীদের বয়কট করে। কেউ কেউ আবার প্রাচুর্যের প্রলোভনও দেখাতে দেখাল। তাদের সেই শত নির্যাতন ও প্রলোভনকে পদদলিত করে রাসূল সা. দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ঘোষণা করলেন, ‘আমার এক হাতে চাঁদ আরেক হাতে যদি সূর্যও এনে দেয়া হয় তবুও আল্লাহ আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করা থেকে কোনো অবস্থাতেই আমি বিরত হবো না।’

রাসূল সা. এর এই ঘোষণা শুনে কাফির মুশরিকরা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হলো যে, তারা মুহাম্মদ সা. কে হত্যা করে ফেলবে। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাকে সে কথা জানিয়ে দিয়ে হিজরত করার নির্দেশ দিলেন। আল্লাহ তায়ালার সেই নির্দেশে তিনি স্বীয় বিছানায় হযরত আলী রা. কে রেখে অতি সন্তর্পণে গৃহ ত্যাগ করেন এবং তাঁর প্রিয় সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. কে সঙ্গী করে মক্কা থেকে ২৯৬ মাইল দূরে অবস্থিত মদীনার অভিমুখে রওনা হন। যেখানে রাসূল সা. এর নির্দেশে ওনার আগেই অনেক সাহাবীগণ একে একে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন।

মদীনার লোকেরা যখন জানতে পারল মুহাম্মদ সা. মদীনায় আসছেন, তখন সেখানকার কবিগণ তাঁকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য কবিতা রচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি দীর্ঘ ২৯৬ মাইল পথ পেরিয়ে ১৫ দিন পর মদীনার উপকণ্ঠ কূবা নামক মহল্লায় এসে পৌঁছলে হাজার হাজার মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো,
তালা’আল বাদ্রু ‘আলায়না
মিন ছানিয়াতুল বিদা।’
অর্থাৎ, বিদা পর্বত থেকে আমাদের উপর পূর্ণিমার চাঁদ উদিত হল।

এই হিজরত ইসলাম প্রচার ও প্রসারে যে অনন্য ভূমিকা রেখেছে তার কোনো তুলনাই হয় না। ইসলামের সুদূরপ্রসারী দিগন্ত উন্মোচিত করেছিল কেবলমাত্র এই হিজরত।
হিজরতের গুরুত্ব বলতে গিয়ে ইতিহাসবিদ যোসেফ হেল বলেন, ‘It is a tuning point in the life and work of the Prophet. The great tuning point in the history of Islam.’
তাই মুসলিম উম্মাহর জীবনে হিজরত একটি অতীব গুরুত্ববহ অধ্যায়। কেন না এই হিজরত থেকেই হিজরি সনের উদ্ভব হয়েছে।

হিজরি সনের গোড়ার কথা :

খলীফা হযরত উমর ফারুক রা. এর শাসনামলে ১৬ হিজরী সনে, প্রখ্যাত সাহাবী হজরত আবু মূসা আশআরী রা. ইরাক এবং কুফার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। একদা হযরত আবু মুসা আশআরী রা. খলীফা উমর রা. এর কাছে এ মর্মে চিঠি লিখলেন যে, ‘আপনার পক্ষ থেকে পরামর্শ কিংবা নির্দেশ সম্বলিত যেসব চিঠি আমাদের নিকট পৌঁছে তাতে দিন, মাস, কাল, তারিখ ইত্যাদি না থাকায় কোন চিঠি কোন দিনে তা নিরুপণ করা আমাদের জন্য সম্ভব হয় না। এতে করে আমাদেরকে নির্দেশ কার্যকর করতে খুব কষ্ট করতে হয়। অনেক সময় আমরা বিব্রত বোধ করি চিঠির ধারাবাহিকতা না পেয়ে। হযরত আবু মুসা আশআরীর চিঠি পেয়ে হজরত উমর রা. এ মর্মে পরামর্শ সভার আহ্বান করেন যে, এখন থেকে একটি ইসলামী তারিখ প্রবর্তন করতে হবে। উক্ত পরামর্শ সভায় হযরত উসমান রা. হযরত আলী রা.সহ বিশিষ্ট অনেক সাহাবী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলের পরামর্শ ও মাতামতের ভিত্তিতে ঐ সভায় ওমর রা. সিদ্ধান্ত দেন ইসলামী সন প্রবর্তনের। তবে কোন মাস থেকে বর্ষের সূচনা করা হবে তা নিয়ে পরস্পরের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়। কেউ মত পোষণ করে রাসূল সা. এর জন্মের মাস রবিউল আউয়াল থেকে বর্ষ শুরু। আবার কেউ কেউ মত পোষণ করেন রাসূল মা. এর ওফাতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক। অন্যান্যের মতে হুজুর সা. এর হিজরতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক।এভাবে বিভিন্ন মতামত আলোচিত হওয়ার পর হজরত উমর রা. বললেন, হুজুর সা. এর জন্মের মাস থেকে হিজরি সনের গণনা শুরু করা যাবে না। কারণ খ্রিস্টান সম্প্রদায় হযরত ঈসা আ. এর জন্মের মাস থেকেই খিস্ট্রাব্দের গণনা শুরু করেছিল। তাই রাসুলের জন্মের মাস থেকে সূচনা করা হলে খ্রিস্টানদের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যাবে, যা মুসলমানদের জন্য পরিতাজ্য।
অাবার হুজুর সা. এর ওফাত দিবসের মাস থেকেও গণনা শুরু করা যাবে না, কারণ এতে হুজুর সা. এর মৃত্যু ব্যথা আমাদের মাঝে বারবার উত্থিত হবে। পাশাপাশি অজ্ঞ যুগের মৃত্যুর শোক পালনের ইসলাম বিরোধী একটি কুপ্রথারই পুনরুজ্জীবন করা হবে। হযরত ওমর রা. এর এই সুক্ষ্ম বক্তব্যকে হযরত উসমান রা. ও হযরত আলী রা. একবাক্যে সমর্থন করেন। অতঃপর বহু চিন্তাভাবনার পর হযরত উমর ফারুক রা. হিজরতের বছর থেকেই ইসলামী দিনপঞ্জি গণনার সিদ্ধান্ত নেন।

হিজরি সনের প্রবর্তক হযরত ওমর ফারুক রা., হযরত আবু মুসা আশ’আরী রা., হযরত আলী রা. এবং হযরত ওমমান রা. এর যৌথ প্রচেষ্টায় ১৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ই জানুয়ারী শুক্রবার থেকে হিজরি সনের প্রচলন শুরু হয়। যা বর্তমান বিশ্বের প্রায় দেড়শ’ কোটি মুসলমানের নিকট অতীব মর্যাদাপূর্ণ এক আমানত।

হিজরী সন ও তারিখের গুরুত্ব মুসলিম জীবনে অনস্বীকার্য। কেন না হিজরী সন এমন একটি সন, যার সাথে সম্পৃক্ত বিশ্ব মুসলিমের তাহজীব-তামাদ্দুন। এছাড়াও রাসূল সা. এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘটনাবলী যেনন- বদর, খন্দক, তাবুক,প্রভৃতি যুদ্ধ, রাজ্য জয় এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলী হিজরি সনের সাথে সম্পৃক্ত। সম্পৃক্ত ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধানও। যেমন- রোজা, হজ, ঈদ, শবে বরাত, শবে কদর, শবে মিরাজসহ ধর্মীয় নানান আচার-অনুষ্ঠান। হাদীসে এসেছে,
তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ। ( মুসলিম,১/৩৪৭)
তাই ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেব গ্রহণ যোগ্য নয়।সুতরাং একজন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য হলো তার সকল কাজ কর্ম হিজরি সনের তারিখ অনুজায়ী সম্পন্য করা।
পবিত্র কোরঅানে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “লোকেরা অাপনাকে নব চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে,আপনি বলুন, তা হলো মানুষের এবং হজের জন্য সময় নির্ধারণকারী।” ( সূরা : বাকারা,১৮৯)

এ আয়াত দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের হিসাব নিকাশের সুবিধার্থে চাঁদকে পঞ্জিকাস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন। আর এজন্যই হিজরি সন গণনাকে ফরযে কেফায়া হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

বাঙ্গালী মুসলমানের জীবনে হিজরি সনের প্রভাব :

বাংলাদেশে হিজরি সনের ব্যাপক প্রচলন ঘটেছে ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ জয়ের পর থেকে। ১২০২ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার বঙ্গ জয়ের সময় হিজরি সনের বয়স ছিল ৬০০ বছর। পনের শতকের দিকের এ দেশের বিভিন্ন স্থাপত্যেরর গায়ে হিজরি সনের ব্যাপক ব্যবহার হয়েছিল। এক সময় মুসলমানদের দৈনন্দিন কাজে সন তারিখ গণনায়, আগে হিজরি সন ব্যবহার করে তার পরে বাংলা ইংরেজীকে উল্লেখ করা হত। কিন্তু বর্তমানে হিজরি সনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। হিজরি সনের নব আগমন উপলক্ষ্যে আমাদের মাঝে নেই তেমন কোনো আনন্দ উচ্ছ্বাস। নেই কোনো প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিশেষ কোনো আয়োজন। যেমনভাবে আয়োজন করা হয় ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ও নববর্ষের আগমনে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রতি এতটা অবজ্ঞা সত্যিই দুঃখজনক।
এটাকে কোনোভাবেই অাধুনিকতা বলা যায় না। বরং নিজ ধর্ম ও ঐতিহ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়াকে কেবল হীনমন্যতাই বলে। রাসূল সা. বলেছেন,
”সে অামার অন্তর্ভুক্ত নয়, যে অন্যান্য জাতীর সাথে সাদৃশ্যতা বজায় রাখে। তোমরা ইহুদী বা নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখ না।” (তিরমিযি,২৮৯৫)

এখন একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের ভেবে দেখা প্রয়োজন যে, পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা সন, পহেলা জানুয়ারী তথা ঈসায়ী সনে আমরা যেভাবে আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করি ঠিক সেভাবে পহেলা মহররম তথা হিজরি নববর্ষে আমরাকি সেভাবে উচ্ছ্বাসিত হয়েছি? ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আমরা বাঙ্গালী যেমন সত্য, তার থেকে আরো সত্য আমরা মুসলমান।’ কাজেই একজন মুসলমান হিসেবে বিশ্বব্যাপি প্রচলিত ইংরেজির মতো নয়,বরনং তারচেয়েও অধিক হারে হিজরি সনের অনুসরণ করা সময়ের দাবী।

জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকীতে নেস্টের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

0

বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদদের প্রতি নেস্ট পরিবার এর পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের বৃষ্টিঝরা শ্রাবণের এই দিনে বৃষ্টির বদলে ঝরেছিল রক্ত। বাংলার ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মতো বিশাল জাতির পিতার বুক থেকে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে রক্তগোলাপের মতো ঝরেছিল লাল রক্ত। কিন্তু তার অবিনশ্বর চেতনা ও আদর্শ ছিল মৃত্যুঞ্জয়ী। ঘাতকের সাধ্য ছিল না ইতিহাসের সেই মহানায়কের অস্তিত্বকে বিনাশ করে। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী। রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ পালিত হচ্ছে জাতির পিতার শাহাদতবার্ষিকী।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে নেস্ট’র শুভেচ্ছা

0

রিদওয়ান আহমেদ: বছর ঘুরে আবার পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে এসেছে। নেস্ট পরিবার এর পক্ষ থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকলকে জানাই পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ‌‌‍’ঈদ মোবারক।’
ঈদ বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। জীবনের প্রতিটা মহূর্ত হোক সুখময়।
আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষে জবেহ কৃত কুরবানীর পশুর রক্তের সাথে মহামারী করোনাও ধুয়ে মুছে যাক, বাংলাদেশ হোক কোভিড-১৯ মুক্ত একটি দেশ, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে এটাই আমাদের প্রার্থনা।
মহান আল্লাহ পাক যেন আমাদের সকলের কুরবানীকে কবুল করেন এবং আমাদের সকলকে সকল প্রকার বালা মছিবত থেকে হেফাযত করেন, আমিন।
ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণ তথা আর্তমানবতার কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

মানব সেবায় অভয় ফখরুল ইসলাম

0

রিদওয়ান আহমেদ: মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে পুরো বিশ্ব লন্ডভন্ড। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে গোটা দুনিয়া। এর আচ এসে লেগেছে বাংলাদেশেও। কোভিড-১৯ এর সংক্রমন থেকে বাচতে ঘর বন্দি হয়ে আছে গোটা দেশ। নিজের সুস্থতা নিয়েই চিন্তিত সবাই, সেখানে অন্যের সুস্থতা নিয়ে চিন্তা করার সময় কোথায়? তারপরও কিছু মানুষ থাকে যারা নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে অন্যের উপকারে নিজে ঝুকি নিতেও পরোয়া করে না। যারা অপরের উপকারে নিজে ঝুকি নিতেও ভয় পায় না, তাদের সারিতে নেস্ট এর রক্তদাতারাও কম নয়।
যেখানে মানুষ ঘরের বাহিরে বের হতেও ভয় পায়, সেখানে হাসপাতালে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। কারণ কার শরীরে করোনা আছে সেটা তো বলা যায় না, আর করোনা রোগীদেরও আনাগোনা হাসপাতালেই বেশি। এমন পরিস্থিতিতেও মানব সেবায় পিছ পা হয়নি নেস্ট এর রক্তদাতা মো: ফখরুল ইসলাম (২৫)। আজ সকালে কল পেয়েই ছুটে গেছেন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি ৯ বছর বয়সের এক রোগীকে রক্ত দিতে। মেয়েটি কিডনি রোগে আক্রান্ত। জরুরী ভিতিত্তে এক ব্যাগ বি পজেটিভ রক্তের প্রয়োজন ছিলো তার। তাই আর দেরি না করেই মেয়েটিকে বাচাতে ছুটে গেছেন হাসপাতালে, স্বেচ্ছায় দিলেন এক ব্যাগ রক্ত।
মো: ফখরুল ইসলাম এ নিয়ে মোট ৭ বার অন্যের জীবন বাচাতে রক্ত দিয়েছেন। আমরা নেস্ট পরিবার ফখরুল ইসলাম সহ আমাদের সকল রক্তদাতাদের উদারতায় গর্বিত। আমরা তাদের দীর্ঘায়ু এবং সুস্থতা কামনা করছি।
আমাদের রক্তদাতারা কখনো কোন রোগী বা রোগীর পরিবারের কোন সদস্য থেকে রক্তদানের বিনিময়ে কোন প্রকার টাকা-পয়সা গ্রহন করেন না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে থাকেন। বিনিময়ে শুধু দোয়াটাই চেয়ে থাকেন।
চাইলে আপনি হতে পারেন নেস্ট পরিবারের একজন সদস্য। হতে পারেন ফখরুল ইসলামের মতো মানব সেবার অভয় যোদ্ধা।

এ্যাড. সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে নেস্ট’র শোক প্রকাশ

0

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি আর নেই। বাংলাদেশ সময় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে আমরা নেস্ট পরিবার গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

এর আগে গত সোমবার থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে।
জ্বর, অ্যালার্জিসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে অসুস্থ অবস্থায় গত ২ জুন সাহারা খাতুন ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গত ১৯ জুন সকালে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।

সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হলে গত ২২ জুন দুপুরে আইসিইউ থেকে এইচডিইউতে (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়। পরে ২৬ জুন সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবারও তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।

১৯৪৩ সালের ১ মার্চ ঢাকার কুর্মিটোলায় জন্মগ্রহণ করেন সাহারা খাতুন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য।

তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।

সাহারা খাতুন ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মহিলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন।